মির্জা অপু, পাবনা প্রতিনিধি:
চালের আটা, নারিকেল কুচি আর খেজুরের গুড়ের মিশ্রণে তৈরি বিভিন্ন মিষ্টান্ন জাতীয় খাবারের নামই হচ্ছে পিঠা।শীতকালে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিশেষ পিঠার উৎসব হয়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার তাসকীনা সিনথী চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের সিনথী পাঠশালায়।
২০১৭ সালের এই দিনে সিনথী পাঠশালার যাত্রা শুরু হয়।মঙ্গলবার ইংরেজি বছরের শেষ দিনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকার সহায়তায় পিঠা উৎসব এবং শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
পাবনার বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়নের শ্যমপুর টাটী গ্রামে অবস্থিত সিনথী পাঠশালার মাঠে বিকেলে পিঠা উৎসব এবং দারিদ্র্যদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
এ সময় তাসকীনা সিনথী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন ও সিনথী পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাহমুদা সবুজ,সড়ক ও জনপদ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান,সিনথী পাঠশালার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম সজীব,কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, দুপুর থেকে সিনথী পাঠশালার শিক্ষিকারা একে একে নানান ধরনের ভাপা পিঠা, কুলি পিঠা, চিতই পিঠা, রস পিঠা, পাকান পিঠা, সারা পিঠা, নকশি পিঠা, পাটিসাপ্টা পিঠা ও কুলসি পিঠাসহ ২০-২৫ ধরনের পিঠা নিয়ে উপস্থিত হন বিদ্যালয়ের মাঠে।একই সঙ্গে আসতে থাকেন অতিথিরাও। ঘড়ির কাঁটা ৩টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পিঠা উৎসব।
বিদ্যালয়ের পরিচালকের হাতে পিঠা তুলে দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান এরপরই শুরু হয় স্বাদে গন্ধে ভরপুর পিঠা ভক্ষণ পর্ব। সে সময় বিভিন্ন পিঠার মৌ মৌ সুবাসে অতিথি এবং সিনথী পাঠশালার আয়োজকরা হারিয়ে যান পিঠার রাজ্যে।
পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথি প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান বলেন, সেই প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে পিঠাপুলি।
শীতের সময় পিঠা হচ্ছে রসনা বিলাসী বাঙালিদের একটি অনন্য খাবার। শীতে পিঠা ছাড়া ভাবাই যায় না। এই পিঠার সাথে গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্যও মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। গ্রামের কৃষকের ঘরে নবান্নের নতুন ধান উঠলেই ঘরের বৌ-ঝিরা ধান ভেনে আটা বানিয়ে তা দিয়ে পিঠা তৈরিতে লেগে যান। এর সাথে যোগ হয় শীতের খেজুরের রস বা খেজুরের গুড়।
তিনি বলেন, আগেকার সময়ে গ্রামের দাদি-নানি বা বড়মারা সাধারণত শীতের পিঠা বানাতেন। এখন আমাদের অনেকেরই দাদি-নানিরা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাই আগের মতো মজা করে পিঠা খাওয়া হয় না। সিনথী পাঠশালার পিঠা উৎসবে আসতে পেরে আমি গর্বিত। অনেক ধরনের পিঠা খেতে পেরে আমি অনন্দিতও বটে। কেননা এতো পিঠা তো কখনো একসাথে খাওয়া হয় না।
পিঠা উৎসব শেষে শুরু হয় শীতের কম্বল বিতরণ। এ সময় ১০০+ গ্রুপের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে অতিথিরা দারিদ্র্য অসহায় মানুষের হাতে শীতের কম্বল তুলে দেন। কম্বল পেয়ে শীতার্ত দারিদ্র্যরাও দারুণ খুশি।
Post a Comment